এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে - এফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার

আপনি কি এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার তা জানতে চান,তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।


এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে

আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে যে, এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে? এটি কি জিনিস? তা না জেনে কখনোই আপনি এটি করে সফল হতে পারবেন না।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে লিংক ব্যবহার করে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে কমিশন করাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। অর্থাৎ যেকোনো একটি অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, কোন কোম্পানির পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করার প্রক্রিয়াকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট

প্রচুর পরিমাণে এফিলিয়েট সাইট রয়েছে, যেই সাইটগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বিশ্বের যতগুলো বড় বড় স্বনামধন্য এফিলিয়েট সাইট রয়েছে সেগুলোর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। 
  • অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েটস

  • ক্লিকব্যাঙ্ক

  • কমিশন জাংশন

  • শেয়ার সেল

  • রাকুটেন অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক

  • ইবে পার্টনার নেটওয়ার্ক

  • সিজে অ্যাফিলিয়েট

  • আউইন

  • ফ্লেক্স অফারস

  • ইম্প্যাক্ট

  • পেপারজাম

  • Shopify অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম

  • ওয়ালমার্ট অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম

মোবাইল দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং

অনেকেই মনে করে যে, এটি করার জন্য ল্যাপটপ বার্ড ডেক্সটপ এর প্রয়োজন হয়। মূলত বিষয়টি এরকম নয়। আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়েও শুরু করতে পারেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। 

এটা করার ক্ষেত্রে মোবাইল, ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ ফ্যাক্টর নয়। বরং মূল বিষয় হলো আপনি যত ট্রাফিক জেনারেট করতে পারবেন, তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যদি আপনার প্রচুর পরিমাণে ফলোয়ার থাকে, তাহলে আপনি সেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেই এটি করতে পারবেন।

অথবা যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেল থাকে কিংবা টিকটক একাউন্ট থাকে, তাহলে সেই একাউন্টের মাধ্যমেও এটা করা যেতে পারে। যাইহোক মোবাইল দিয়ে এটি করার পদ্ধতি সমূহ নিচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো। 

  • এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক নির্বাচন করুন।

  • এফিলিয়েট হিসেবে সাইন আপ করুন।

  • সার্ভিস বা পণ্য পছন্দ করুন।

  • এফিলিয়েট লিংক জেনারেট করুন।

  • মোবাইল ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট তৈরি করুন।

  • মোবাইলের বিভিন্ন প্লাটফর্মের মাধ্যমে পণ্যটি প্রমোট করুন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং গাইডলাইন

আর্টিকেলটির এই অংশে এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কিছু গাইডলাইন তুলে ধরা হবে।  নিম্ন বর্ণিত গাইডলাইন গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি এটি করে সফল হতে পারবেন এবং খুব সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। 
  • এসইও: আপনার ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যথাযথভাবে এসইও করতে হবে। এসইও না করলে অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন না। আর ট্রাফিক না পেলে এটি করে কখনো আপনি সফল হতে পারবেন না। 

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে খুব সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। 

  • বুস্ট ট্রাফিক: যে মাধ্যমে আপনি এটা করতে চান না কেন অবশ্যই আপনার প্রচুর পরিমাণে ট্রাফিকের প্রয়োজন হবে। ট্রাফিক যদি কম থাকে তাহলে এফিলিয়েট বা সিপিএ মার্কেটিং করে সফল হওয়া যায় না। 

  • পারফরম্যান্স এনালাইস করুন: আপনি যেই স্ট্যাটেজিতে কাজ করে যাচ্ছেন সেই স্ট্র্যাটে যে কতটুকু কার্যকর তা এনালাইজ করুন। যদি আপনার গৃহীত স্ট্রাটেজি কার্যকর হয় তাহলে তা চালিয়ে যান। আর যদি ফলাফল ভালো না হয়, তাহলে আপনার মার্কেটিং স্ট্রাটেজি পরিবর্তন করুন। 

  • ফাইনালি রেভিনিউ জেনারেট করুন: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি এটি করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

এটা করার বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। আপনি যদি সঠিক পন্থায় এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে প্যাসিভলি ইনকাম করতে পারবেন। অর্থাৎ একসময় এমন হবে যে, আপনি কোন ধরনের কোন কাজ না করেই রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন। যাইহোক, এর সুবিধা সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো। 
  • প্যাসিভ ইনকাম।

  • মূলধনের প্রয়োজন হয় না।

  • স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়।

  • যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট প্রমোশন করা যায়।

  • কাস্টমার সাপোর্ট বা লজিস্টিক সাপোর্টের ঝামেলা নেই।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল

এটি করা সরাসরি হালাল কিংবা হারাম নয়। বরং আপনি কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করছেন সেটি দেখার বিষয়। আপনি যদি অ্যালকোহল জাতীয় পণ্যের মার্কেটিং করেন তাহলে অবশ্যই তা হারাম বলে বিবেচিত হবে। অ্যালকোহল জাতীয় পণ্য সেবন, সংরক্ষণ কিংবা বিক্রি করা ইসলাম ধর্ম অনুসারী সম্পূর্ণ নিষেধ।

পক্ষান্তরে আপনি যদি দৈনন্দিন ব্যবহার্য হালাল কোন পণ্যের মার্কেটিং করেন, তাহলে তা সম্পূর্ণ বৈধ হবে। অর্থাৎ আপনি যদি হালাল প্রোডাক্ট প্রমোট করেন তাহলে এটা হালাল হবে।

আর হারাম প্রোডাক্ট প্রমোট করেন তাহলে এটা হারাম হবে। সুতরাং এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল? তার সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার উপরে। চাইলে আপনি হালালভাবে এটি করতে পারেন। আবার হারাম ভাবেও এটা করা যায়। 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর বেশ কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। নিচে এর প্রকার প্রকরণগুলো লিস্ট আকারে তুলে ধরা হলো। 
  • কনটেন্ট বেসড এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • ইনফ্লুয়েন্সার এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • কুপন এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • ইমেইল এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • রিভিউ এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • পিপিসি এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • এমএলএম এফিলিয়েট মার্কেটিং।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব

এটি করার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটা করলে আপনি যে সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবগত থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনি এটি করতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। যাইহোক আসুন জেনে নেয়া যাক, এটি কেন করব? 
  • যত বেশি ট্রাফিক, তত বেশি ইনকাম।

  • প্রচুর টাকা আয়ের সুযোগ।

  • কোন ধরনের ইনভেস্ট ছাড়াই এটা শুরু করা যায়।

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফলোয়ারদের মাঝেই এটা করা যায়।

  • কোন ধরনের ঝুঁকি বা রিস্ক ছাড়াই টাকা ইনকাম করা যায়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করে তাদের কি বলে

অনলাইন থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়। যারা ইউটিউবিং করে টাকা ইনকাম করে তাদেরকে বলা হয় ইউটিউবার। যারা ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করে তাদেরকে বলা হয় ব্লগার। আর অনলাইন থেকে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করে তাদেরকে বলা হয় এফিলিয়েট মার্কেটার।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো

চাইলেই কিন্তু আপনি এটি শুরু করতে পারবেন না। আর যেনতেন ভাবে শুরু করলেও সফল হতে পারবেন না। তাই এটা করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। 

আপনি যদি নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করেন তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে সফল হতে পারবেন। চলুন দেখে নেয়া যাক, এটি কিভাবে শুরু করবো? 
  • নিস সিলেক্ট করুন। 

  • এফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করুন। 

  • সাইন আপ করুন।

  • অনলাইন প্লাটফর্ম দাঁড় করান (ব্লগ ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া)। 

  • অ্যাট্রাক্টিভ কন্টেন্ট তৈরি করুন।

  • কন্টেন্টের মাঝে এফিলিয়েট লিংক বসিয়ে দিন।  

 সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উওর

এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে?

ইন্টারনেটের মাধ্যমে লিংক ব্যবহার করে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে কমিশন করাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। অর্থাৎ যেকোনো একটি অনলাইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, কোন কোম্পানির পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করার প্রক্রিয়াকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি?  

এটি কত প্রকার ও কি কি নিচে দেয়া হলোঃ

  • কনটেন্ট বেসড এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • ইনফ্লুয়েন্সার এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • কুপন এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • ইমেইল এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • রিভিউ এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • পিপিসি এফিলিয়েট মার্কেটিং।

  • এমএলএম এফিলিয়েট মার্কেটিং।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি কি?

এর সুবিধা সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো। 

  • প্যাসিভ ইনকাম।

  • মূলধনের প্রয়োজন হয় না।

  • স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়।

  • যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট প্রমোশন করা যায়।

  • কাস্টমার সাপোর্ট বা লজিস্টিক সাপোর্টের ঝামেলা নেই।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল?

এটি করা সরাসরি হালাল কিংবা হারাম নয়। বরং আপনি কিভাবে এটা করছেন সেটি দেখার বিষয়। আপনি যদি অ্যালকোহল জাতীয় পণ্যের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন তাহলে অবশ্যই তা হারাম বলে বিবেচিত হবে। অ্যালকোহল জাতীয় পণ্য সেবন, সংরক্ষণ কিংবা বিক্রি করা ইসলাম ধর্ম অনুসারী সম্পূর্ণ নিষেধ। 

পক্ষান্তরে আপনি যদি দৈনন্দিন ব্যবহার্য হালাল কোন পণ্যের মার্কেটিং করেন, তাহলে তা সম্পূর্ণ বৈধ হবে। অর্থাৎ আপনি যদি হালাল প্রোডাক্ট প্রমোট করেন তাহলে এটা হালাল হবে। 

আর হারাম প্রোডাক্ট প্রমোট করেন তাহলে এটা হারাম হবে। সুতরাং এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল? তার সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার উপরে। চাইলে আপনি হালালভাবে এটি করতে পারেন। আবার হারাম ভাবেও এটা করা যায়।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব?

আসুন জেনে নেয়া যাক, এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব? 
  • যত বেশি ট্রাফিক, তত বেশি ইনকাম।

  • প্রচুর টাকা আয়ের সুযোগ।

  • কোন ধরনের ইনভেস্ট ছাড়াই এটি শুরু করা যায়।

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফলোয়ারদের মাঝেই এটা করা যায়।

  • কোন ধরনের ঝুঁকি বা রিস্ক ছাড়াই টাকা ইনকাম করা যায়।

শেষকথা

প্রিয় পাঠক ভাই এবং বোনেরা, এই আর্টিকেলটিতে "এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে - এফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার" ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি,আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে এই বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

Previou Movie Next Movie