ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ফুসফুসে পানি জমা, যাকে প্লিউরাল ইফিউশন বলা হয়, একটি গুরুতর অবস্থা যেখানে ফুসফুসের চারপাশের পাতলা স্থানে অতিরিক্ত তরল জমা হয়। এটি শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা এবং কাশির কারণ হতে পারে।
যদিও চিকিৎসার মাধ্যমেই এই অবস্থার মূল কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা উচিত, তবে ফুসফুসে পানি জমলে কিছু খাবার আপনার উপসর্গগুলি কমাতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
এই আর্টিকেলে, আমরা ফুসফুসে পানি জমাকে কি বলে, ফুসফুসে পানি জমে কেন, ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণ গুলো কি কি, ফুসফুসে পানি জমলে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত, ফুসফুসে পানি জমে গেলে কি খাবার খেতে হবে এবং কোন খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে ইত্যাদি সহ আরো অনেক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
ফুসফুসে পানি জমাকে কি বলে
ফুসফুসে পানি জমাকে প্লিউরাল ইফিউশন বলা হয়। প্লিউরাল হলো ফুসফুসকে আবৃত করে থাকা পাতলা স্তরের ঝিল্লি। যখন এই ঝিল্লীর মধ্যে অতিরিক্ত তরল জমা হয়, তখন তাকে প্লিউরাল ইফিউশন বলা হয়। এই অতিরিক্ত তরল সিরাস, পিও বা রক্ত হতে পারে।
ফুসফুসে পানি জমে কেন
ফুসফুসে পানি জমার অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে। নিচে ফুসফুসে পানি জমার কারণ গুলো তুলে ধরা হলো। যেমনঃ
১। সংক্রমণ
- নিউমোনিয়াঃ এটি ফুসফুসের একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যা প্লিউরাল ইফিউশনের সবচেয়ে সাধারণ কারণ।
- যক্ষ্মাঃ এটি ফুসফুসের একটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যা প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- ভাইরাল সংক্রমণঃ কিছু ভাইরাল সংক্রমণ, যেমন এপস্টাইন-বার ভাইরাস, ফুসফুসের প্রদাহ এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
২। অটোইমিউন রোগ
- গন্ধার্ত্রঃ এটি একটি অটোইমিউন রোগ যা ফুসফুসের ঝিল্লীর প্রদাহ ঘটাতে পারে এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- লুপাসঃ এটি একটি অটোইমিউন রোগ যা বিভিন্ন অঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে ফুসফুস এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিসঃ এটি একটি অটোইমিউন রোগ যা জয়েন্টের প্রদাহ ঘটায় এবং কিছু ক্ষেত্রে প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
৩। ক্যান্সার
- ফুসফুসের ক্যান্সারঃ এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের একটি সাধারণ জটিলতা।
- অন্যান্য ক্যান্সারঃ স্তন ক্যান্সার, মেটাস্টাসাইজড লিম্ফোমা এবং অন্যান্য ক্যান্সারও প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
৪। হৃদরোগ
- কনজেসটিভ হার্ট ফেইলারঃ যখন হৃদয় দুর্বল হয়ে যায় এবং পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না তখন এটি ঘটে। এর ফলে ফুসফুসে তরল জমতে পারে এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
৫। ফুসফুসের আঘাতঃ
- ক্ষতঃ বুকে ছুরি বা বন্দুকের আঘাত ফুসফুসের আঘাত এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- আঘাতঃ গাড়ি দুর্ঘটনা বা পতনের মতো তীব্র আঘাত ফুসফুসের আঘাত এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- নিমজ্জনঃ জলে ডুবে থাকা ফুসফুসের আঘাত এবং প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
৬। অন্যান্য কারণ
- যকৃতের রোগঃ সিরোসিস সহ কিছু যকৃতের রোগ প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- কিডনি রোগঃ নেফ্রোটিক সিনড্রোম সহ কিছু কিডনি রোগ প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণ
ফুসফুসে পানি জমার অনেক গুলো লক্ষণ রয়েছে। নিচে ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণ গুলো তুলে ধরা হলো। যেমনঃ
- শ্বাসকষ্টঃ শ্বাস নেওয়া কঠিন বা বেদনাদায়ক হতে পারে, বিশেষ করে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার সময় বা কাশির সময়।
- বুকে ব্যথাঃ বুকে তীক্ষ্ণ বা ব্যথার অনুভূতি হতে পারে, বিশেষ করে শ্বাস নেওয়ার সময় বা কাশির সময়।
- শুষ্ক কাশিঃ কাশি ক্রমাগত হতে পারে এবং বুকে ব্যথার সাথে থাকতে পারে।
- জ্বরঃ জ্বর হালকা থেকে তীব্র হতে পারে।
- ওজন হ্রাসঃ অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস প্লিউরাল ইফিউশনের একটি লক্ষণ হতে পারে।
- ক্ষুধামান্দ্যঃ খাবারের প্রতি আগ্রহ হ্রাস পেতে পারে।
- শরীরে ক্লান্তিঃ অস্বাভাবিক ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা।
অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে, যেমনঃ
- ঠান্ডা লাগাঃ কাঁপুনি এবং ঠান্ডা অনুভূতি হতে পারে।
- রাতের ঘুমে সমস্যাঃ শ্বাস নেওয়ার অসুবিধার কারণে ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে।
- বুকে ঘষা শব্দঃ শ্বাস নেওয়ার সময় স্টেথোস্কোপ দিয়ে শোনা যায় এমন ঘষা শব্দ।
- মুখ ও ঠোঁটে নীলচে ভাবঃ গুরুতর ক্ষেত্রে, অপর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণের কারণে ত্বক নীলচে হয়ে যেতে পারে।
বিঃদ্রঃ
- এই লক্ষণগুলি অন্যান্য চিকিৎসা অবস্থারও লক্ষণ হতে পারে।
- যদি আপনি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে দ্রুত একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।
- একজন ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা, এক্স-রে, CT স্ক্যান বা আল্ট্রাসাউন্ড সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে নির্ণয় করবেন।
- চিকিৎসা নির্ভর করবে প্লিউরাল ইফিউশনের অন্তর্নিহিত কারণের উপর।
এছাড়াও নিচে কিছু অতিরিক্ত তথ্য রয়েছে যা আপনার জানা উচিত
- প্লিউরাল ইফিউশন যেকোনো বয়সে হতে পারে, তবে এটি ৬৫ বছরের বেশি বয়সী লোকেদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
- পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের প্লিউরাল ইফিউশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- প্লিউরাল ইফিউশন একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসায় এটি নিরাময়যোগ্য।
ফুসফুসে পানি জমলে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত
ফুসফুসে পানি জমলে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত নিচে তা দেওয়া হলো।
প্রথম পদক্ষেপঃ
- তৎক্ষণাৎ একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করুন। প্লিউরাল ইফিউশন একটি গুরুতর অবস্থা যার জন্য দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
- আপনার ডাক্তারের সাথে আপনার লক্ষণগুলি, চিকিৎসা ইতিহাস এবং ঔষধের তালিকা নিয়ে আলোচনা করুন।
- আপনার ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং ইমেজিং পরীক্ষা, যেমন এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান, নির্ধারণ করতে পারেন যে আপনার প্লিউরাল ইফিউশন আছে কিনা।
চিকিৎসাঃ
- চিকিৎসা নির্ভর করবে প্লিউরাল ইফিউশনের অন্তর্নিহিত কারণের উপর।
- সংক্রমণের জন্য, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল বা অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে।
- অটোইমিউন রোগের জন্য, স্টেরয়েড বা অন্যান্য ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে।
- ক্যান্সারের জন্য, ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রয়োজন হবে।
- হৃদরোগের জন্য, ঔষধ এবং জীবনধারার পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে।
- ফুসফুসের আঘাতের জন্য, সমর্থনকারী যত্ন প্রয়োজন হবে।
ঘরোয়া উপায়ঃ
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন, বিশেষ করে জল। এটি শ্লেষ্মা পাতলা করতে এবং কাশি হ্রাস করতে সাহায্য করবে।
- বিশ্রাম নিন। আপনার শরীরকে নিরাময় করতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম প্রয়োজন।
- মাথার উপরে উঁচু করে শোন। এটি শ্বাস নেওয়া সহজ করতে পারে।
- ধূমপান এড়িয়ে চলুন। ধূমপান ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান। শাকসবজি, ফল, এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খান।
- প্রয়োজনে ব্যথা উপশমকারী ঔষধ খান। ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথা উপশমকারী ঔষধ যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেন ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে
ফুসফুসে পানি জমা (প্লিউরাল ইফিউশন) একটি গুরুতর অবস্থা যার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন।
চিকিৎসার পাশাপাশি, আপনার খাদ্যে কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন যা উপশম প্রদানে এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। নিচে ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। যেমনঃ
- শাকসবজি ও ফলঃ এগুলি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি, ব্রোকলি, বেরি, আপেল এবং কমলালেবু খাওয়ার উপর জোর দেওয়া উচিত।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারঃ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। স্যামন, সার্ডিন, বাদাম, বীজ এবং সয়াবিচ বীজের মতো খাবারে এগুলি পাওয়া যায়।
- শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী খাবারঃ আদা, রসুন, পেঁয়াজ এবং হলুদের মতো খাবারে প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
- গরম তরলঃ প্রচুর পরিমাণে জল, ঝোল এবং গরম স্যুপ পান করা শ্লেষ্মা পাতলা করতে এবং কাশি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারঃ দই, কেফির মতো প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পেটের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে, যা সামগ্রিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আশা করি, ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
ফুসফুসে পানি জমলে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে সেই সম্পর্কে, আমরা এখন জানবো ফুসফুসে পানি জমলে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলতে হবে সেই সম্পর্কে। যেমনঃ
এড়িয়ে চলার খাবার
- লবণাক্ত খাবারঃ লবণ শরীরে তরল ধরে রাখতে পারে, যা ফুসফুসে পানি জমার অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে।
- প্রক্রিয়াজাত খাবারঃ এগুলোতে প্রায়শই উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা প্রদাহ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- চিনিযুক্ত পানীয়ঃ সোডা, জুস, এনার্জি ড্রিঙ্কগুলি প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- অ্যালকোহলঃ অ্যালকোহল শরীরকে ডিহাইড্রেট করে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
- ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ঃ কফি এবং চা শরীরে তরল বের করে দিতে পারে এবং ডিহাইড্রেশন বাড়াতে পারে।
এই খাবারগুলি এড়িয়ে চলার পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা এবং একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ যা ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ। এটি আপনার শরীরকে নিরাময় করতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা উন্নত করতে সাহায্য করবে।
ফুসফুসে পানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
নিচে ফুসফুসে পানি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো। যেমনঃ
১। প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন
- জল, ঝোল এবং গরম স্যুপ পান করা শ্লেষ্মা পাতলা করতে এবং কাশি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস তরল পান করার চেষ্টা করুন।
২। আদা
- আদার প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফুসফুসের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
- আপনি আদা চা পান করতে পারেন, আদা সহ খাবার রান্না করতে পারেন বা আদা ক্যাপসুল খেতে পারেন।
৩। রসুন
- রসুনেরও প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
- আপনি রসুন কাঁচা খেতে পারেন, রসুন সহ খাবার রান্না করতে পারেন বা রসুন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
৪। হলুদ
- হলুদের একটি সক্রিয় যৌগ, কারকুমিন, প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- আপনি হলুদ চা পান করতে পারেন, হলুদ সহ খাবার রান্না করতে পারেন বা হলুদ সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
৫। লবণাক্ত জল দিয়ে নেবুলাইজেশন
- লবণাক্ত জল দিয়ে নেবুলাইজেশন শ্লেষ্মা পাতলা করতে এবং শ্বাস নিতে সহজ করতে সাহায্য করতে পারে।
- একটি নেবুলাইজার ব্যবহার করে বা গরম লবণাক্ত জলের বাষ্প শ্বাস নিয়ে এটি করা যেতে পারে।
৬। বিশ্রাম
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম আপনার শরীরকে নিরাময় করতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
৭। মাথার উপরে উঁচু করে শোন
- মাথার উপরে বালিশ দিয়ে শোওয়া শ্বাস নিতে সহজ করতে পারে।
৮। ধূমপান এড়িয়ে চলুন
- ধূমপান ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি এড়িয়ে চলা উচিত।
ফুসফুসে পানি জমলে কি খাবার খেতে হবে সেই সম্পর্কে কিছু FAQ এবং উত্তর
প্রশ্নঃ ফুসফুসে পানি জমা কী?
উত্তরঃ ফুসফুসে পানি জমা, যাকে প্লিউরাল ইফিউশন বলা হয়, হল ফুসফুসের চারপাশের স্থানে তরল জমা হওয়া। এই তরল প্লিউরাল স্পেস নামে পরিচিত একটি পাতলা স্তরের মধ্যে জমা হয় যা ফুসফুস এবং বুকের দেয়ালের মধ্যে অবস্থিত।
প্রশ্নঃ ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণগুলি কি কি?
উত্তরঃ ফুসফুসে পানি জমার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে, যেমনঃ
- শ্বাসকষ্ট
- বুকে ব্যথা, বিশেষ করে শ্বাস নেওয়ার সময় বা কাশির সময়
- শুষ্ক কাশি
- জ্বর
- ওজন হ্রাস
- ক্ষুধামান্দ্য
- ক্লান্তি
- ঠান্ডা লাগা
- রাতের ঘুমে সমস্যা
- মুখ ও ঠোঁটে নীলচে ভাব
প্রশ্নঃ ফুসফুসে পানি জমার কারণ কি কি?
উত্তরঃ ফুসফুসে পানি জমার অনেকগুলি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে,
- সংক্রমণঃ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ প্লিউরাল ইফিউশনের একটি সাধারণ কারণ।
- অটোইমিউন রোগঃ রিউমেটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং লুপাসের মতো অটোইমিউন রোগ প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- ক্যান্সারঃ ফুসফুসের ক্যান্সার এবং অন্যান্য ধরণের ক্যান্সার প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- হৃদরোগঃ কনজেসটিভ হার্ট ফেইলারের মতো হৃদরোগ প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- ফুসফুসের আঘাতঃ ক্ষত, আঘাত বা অন্যান্য ধরণের ফুসফুসের আঘাত প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
- অন্যান্য কারণঃ থাইরয়েড সমস্যা, রক্তের জমাট বাঁধার ব্যাধি এবং কিছু ঔষধ প্লিউরাল ইফিউশনের কারণ হতে পারে।
প্রশ্নঃ ফুসফুসে পানি জমার চিকিৎসা কি?
উত্তরঃ চিকিৎসা নির্ভর করবে প্লিউরাল ইফিউশনের অন্তর্নিহিত কারণের উপর।
- সংক্রমণের জন্য, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল বা অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ প্রয়োজন।
- অটোইমিউন রোগের জন্য, স্টেরয়েড বা অন্যান্য ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে।
- ক্যান্সারের জন্য, ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রয়োজন হবে।
- হৃদরোগের জন্য, ঔষধ এবং জীবনধারার পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে।