মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ-ফুলকপি চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জেনে নিন
আপনি কি মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটিতে মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ-ফুলকপি চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনারা যারা মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করতে চান,তারা অবশ্যই এই আর্টিকেলটি পড়বেন। আশা করি উপকৃত হবেন।
শীত মৌসুমের সবজির মধ্যে ফুলকপির একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। ভিটামিন এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় এর চাহিদা ভালো। ফুলকপি বপনের এটাই উপযুক্ত সময়। কৃষকরা সব ধরনের মাটিতে এটি চাষ করতে পারে। মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। শীতল ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ফুলকপির চাষ করা ভালো। এটি প্রচন্ড ঠান্ডা বা চরম তাপ সহ্য করতে পারে না। শুষ্ক আবহাওয়া ও আর্দ্রতাও এ ফসলের অনুকূল নয়। যদিও ফুলকপি সব জায়গায় বপন করা হয়।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ
ফুলকপি শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে এটি উন্নত প্রযুক্তিতে সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে শীতকালে ফুলকপির ফলন সব চেয়ে ভালো হয়। শীতকালে ফুলকপির ভালো ফলন হলেও এই সময় বাজারে আরো অনেক শীতকালীন সবজি থাকায় ফুলকপির বাজার দর অনেক কম থাকে। তাই আমাদের দেশের কৃষকরা বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে আগাম বা অতি আগাম ফুলকপির জাত চাষ করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ আধুনিক পদ্ধতিতে আখ চাষ
প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনের এই যুগে কৃষিতেও প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়েছে। অনেক কৃষক কৃষিকাজে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের উৎপাদন বাড়াচ্ছেন। উৎপাদন বৃদ্ধির একটি কারণ হচ্ছে, প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আগের তুলনায় লোকসান কমছে। আজ আমরা এমনই একটি প্রযুক্তির কথা বলব, যেটি বহু বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু এখন এটির রূপ বদলেছে। এখানে আমরা মালচিং পেপারের কথা বলছি, যার মাধ্যমে ক্ষেতে মালচিং করা হয়।
আগাম বা অতি আগাম ফুলকপির চাষের ক্ষেত্রে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কারণ এই সময় যেহেতু অফসিজিন থাকে তাই মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ না করলে ফলন ভালো হয় না। তাই অফ সিজিনে ফুল কপি চাষের ক্ষেত্রে মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ অনেক গুরুত্ব পূর্ণ।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ কেনো করবো?
যেহেতু অতি আগাম বা আগাম ফুলকপি চাষ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ একটি চাষ এবং অফসিজিনে ফুলকপির চাষ তেমন একটা ভালো হয়না। কিন্তু অফসিজিনে ফুলকপির বাজার দর অনেক ভালো থাকে এবং কৃষকরা অনেক লাভবান হয়ে থাকে। ফলে আমাদের দেশের কৃষকরা প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও অফসিজিনে ফুলকপি চাষ করে থাকে । আর তাই কৃষকদের এই ঝুঁকি কমানোর জন্য মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করা হয়ে থাকে।
অফসিজিনে মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করলে ফুলকপির ফলন অনেক ভালো হয় এবং রোগ বালাই কম হয়,সেচ কম লাগে অর্থাৎ উতপাদন খরচ অনেক কম হয়। ফলে কৃষকরা অনেক বেশি লাভবান হয়। আর এই কারনেই মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে আমাদের দেশের স্মার্ট কৃষি উদ্ধোক্তারা শীতকালেও মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ মালচিং করার প্রয়োজনীয়তা কি
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার কারণে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়। কারণ কৃষকদের সেচ কম দিতে হয়। দ্বিতীয়ত, এটি আগাছা অপসারণের খরচ বাঁচায়। তৃতীয়ত, এ কারণে কীটনাশক খরচ কম হয়। এসবের ফলন ভালো ফলন ও কম খরচে, যার কারণে কৃষকের আয় দ্বিগুণ হয়।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের সুবিদা
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার অনেক গুলো সুবিদা রয়েছে । যেমনঃ
১.জমিতে বেশি জল দেওয়ার দরকার নেই কারণ পলিথিন জলকে বাষ্প হতে দেয় না এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য আর্দ্রতা ধরে রাখে। অর্থাৎ সেচ খরচ কমায়।
২.শিকড়ের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
৩.বাহ্যিক রোগ থেকে উদ্ভিদের শিকড় রক্ষা করে। আর ফসল অন্যান্য ভাইরাস থেকে রক্ষা পায়।
৪.ভাল এবং পরিষ্কার ফসল ফলন
৫.ফসলের গুণমান বৃদ্ধি পায়
৬.লেবার খরচ অনেক কম লাগে
৭.কীটনাশক খরচ অনেক কম লাগে
৮.আগাছা নিয়ন্ত্রণে থাকে
৯. যেহেতু আগাছা কম হয়,তাই জমির সার আগাছা নষ্ট করতে পারেনা। ফলে সার অনেক কম লাগে।
১০. উৎপাদন খরচ কমায়
কোন কোন ফসলে মালচিং করা যায়?
স্ট্রবেরি, মরিচ, শসা, বাঁধাকপি, পেঁপে, করলা, করলা, কুমড়া, লেডিস ফিঙ্গার, টমেটো, ক্যাপসিকাম, তুলসী ইত্যাদি। মালচিং শীটগুলি পঁচিশ মাইক্রন, ত্রিশ মাইক্রন এবং একশো মাইক্রনে আসে এবং এর দৈর্ঘ্য পাঁচ মিটার, দশ মিটার, বিশ মিটার, পঁচিশ মিটার, পঞ্চাশ মিটার, একশ মিটার এবং চারশ মিটার।
ফুলকপি চাষের উপযুক্ত সময়
যেহেতু আমাদের দেশের কৃষকরা ফুলকপির বিভিন্ন জাতে উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময় যেমন অতি আগাম, মাঝারি আগাম,আগাম এবং সিজিনের সময় মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করে থাকে। তাই ফুলকপির জাতের পরিপক্কতার সময় অনুসারে, আমরা বপনের সময়কে নিম্নরূপ শ্রেণীবদ্ধ করতে পারি-
১. খুব প্রাথমিক জাতের জন্য বপনের সময়: মে মাসের শেষ থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত,
২. আগাম জাতের জন্য বপনের সময়: পুরো জুন মাস পর্যন্ত,
৩. মাঝারি জাতের জন্য বপনের সময়: মধ্য জুলাই থেকে আগস্ট,
৪. দেরী জাতের জন্য বপনের সময়: সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর,
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের জন্য উপযুক্ত মাটি নির্বাচন
ফুলকপি চাষের জন্য দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। বেলে মাটিতে আগাম জাত এবং দোআঁশ মাটিতে দেরী জাতের ফলন লাভজনক হবে। ফুলকপির ফসল অ্যাসিডের প্রতি সহনশীল। এছাড়াও, জমিতে ভাল নিষ্কাশন থাকা উচিত, জলাবদ্ধতার কোনও সমস্যা হওয়া উচিত নয় এবং ভাল জীবাশ্মযুক্ত মাটি থাকা উচিত।
যার pH মান ৫.৫ থেকে ৬.৮ এর মধ্যে হওয়া উচিত। আর দোআঁশ বা এঁটেল মাটি পশ্চাৎপদ ধরনের চাষের জন্য উপযোগী। এই ধরনের ক্ষেত ভাল জৈব পদার্থ এবং ভাল নিষ্কাশনের সাথে উর্বর হওয়া উচিত। এর চাষের জন্য, জমির pH মান ৫.৫ থেকে ৭ এর মধ্যে হওয়া উচিত।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু ও তাপমাত্রা
ফুলকপির সফল চাষের জন্য শীতল ও আর্দ্র জলবায়ু সবচেয়ে ভালো। এটি শীতল ও আর্দ্র আবহাওয়ায় সহজেই জন্মানো যায়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের কারণে ফুলের বেশি ক্ষতি হয়। উদ্ভিদের বৃদ্ধির সময় তাপমাত্রা অনুকূলের চেয়ে কম হলে ফুলের আকার ছোট হয়ে যায়। ভালো ফসলের জন্য ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা সবচেয়ে ভালো। খুব গরম জলবায়ু এর চাষের জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ গরম আবহাওয়ায় এর ফুলের গুণাগুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে ফলনও ভালো হয় না।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের জন্য চারা তৈরি
ফুলকপির আগাম জাতের জন্য, মে থেকে জুন মাসে বীজ বপন করা হয়, যা উপযুক্ত সময়ে ফলন দেয় এবং বাজারে ভাল দামও পায়। এ ছাড়া দেরী জাতের বীজ রোপণ করা হয় অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে এবং মধ্য-মৌসুমী জাতের জন্য জুলাই থেকে আগস্ট মাসে বীজ বপন করা হয়। আপনারা সবাই জানেন যে ফুলকপির বীজ ভালো। এর চাষ গাছের আকারে বপন করা হয়।
চাষের জন্য, ফুলকপির বীজ প্রথমে সঠিকভাবে প্রস্তুত নার্সারিতে বপন করা হয়। যাতে কিছুক্ষণ পর ফুলকপির চারা তৈরি হতে পারে। নার্সারিতে ১ মিটার চওড়া এবং ৩ মিটার লম্বা বেড প্রস্তুত করুন এবং ৩০ সেন্টিমিটার ড্রেনে দুটি বেডের বীজ বপন করুন। বেড তৈরির আগে নার্সারির মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গোবর বা কম্পোস্ট মিশিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এই প্রস্তুত বেডে ফুলকপির বীজ বপন করুন এবং সঠিক আর্দ্রতার জন্য বেডের মাঝখানে তৈরি ড্রেনে হালকা সেচ দিন যাতে বীজগুলি ভালভাবে অঙ্কুরিত হতে পারে। কড়া রোদ এবং অতিরিক্ত বৃষ্টি থেকে এই ফুলকপির বিছানাগুলিকে রক্ষা করার জন্য, তাদের উপরে একটি ছুরির ব্যবস্থা করুন। বীজ বপনের এক মাস পরে, এর গাছগুলি জমিতে রোপণের জন্য প্রস্তুত।
আরো পড়ুনঃ মালচিং পেপার কি? মালচিং পেপার ব্যবহারের নিয়ম
তবে বর্তমানে আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রিনহাউজ পদ্ধতিতে বানিজ্যিক ভাবে সঠিক সময়ে সঠিক জাতে চারা তৈরি করা হয়। যে চারা গুলো ১০০ ভাগ সুস্থ চারা। মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার ক্ষেত্রে এই চারা গুলো সংগ্রহ করে রোপণ করা সবচেয়ে উওম।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের সার ব্যবস্থাপনা
প্রতি একর ভিত্তিতে প্রয়োগ করতে, নিম্নলিখিত সার প্রয়োগ করুন:- ৪০ টন গোবর সার ৫০ কেজি নাইট্রোজেন (১০০ কেজি ইউরিয়া) ২৫ কেজি ফসফরাস (১৫০ কেজি সুপারফসফেট) ২৫ কেজি পটাশ (৪০ কেজি মিউরেট অফ পটাশ) সমস্ত গোবর সার + সমস্ত ফসফরাস + সমস্ত পটাশ + অর্ধেক নাইট্রোজেন রোপণের আগে জমিতে রাখুন এবং ভালভাবে মিশিয়ে নিন। আর বাকি অর্ধেক নাইট্রোজেন চার সপ্তাহ পর যোগ করুন।
তবে সারের পরিমান জমির উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের জন্য জমি তৈরি
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার জন্য প্রথমে জমি ৪ থেকে ৬ টি গভীর করে চাষ দিতে হবে। শেষ চাষের আগে পরিমাণ মত সার গুলো জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। তারপর লেবার দিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। তারপর বেডের উপর দিয়ে ভালো ভাবে মালচিং পেপার বিছাতে হবে। তারপর ফুলকপির সাইজের উপর নির্ভর করে ১৮ ইঞ্চি বা ২৬ ইঞ্চি দুরে দুরে চারা রোপনের জন্য মালচিং এর উপর ছিদ্র করতে হবে।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের চারা রোপণ
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের ক্ষেত্রে জমি তৈরির সময় মালচিং এর উপর যে ছিদ্র করা হবে সেই ছিদ্রে একটি করে সুস্থ চারা রোপণ করতে হবে। যেহেতু ফুলকপির চারা অনেক নরম তাই বিকেল বেলা চারা রোপণ করা উওম। চারা রোপণের পর অবশ্যই জমিতে সেচ দিতে হবে।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের সেচ ব্যবস্থাপনা
প্রথম সেচ রোপণের পরপরই দিতে হবে, দ্বিতীয় সেচ রোপণের ৪-৫ দিন পর দিতে হবে, প্রথম দিকের ফসলে ৭ দিন এবং দেরিতে ফুলকপিতে ১০-১৫ দিন অন্তর সেচ দেওয়া ভালো, মনে রাখবেন ফুলকপিতে ক্ষেতে জল জমে থাকা উচিত নয়, অন্যথায় গাছগুলি হলুদ হয়ে মারা যাবে এবং সঠিক নিষ্কাশনের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় জল অপসারণ করুন।
আগাছা নিয়ন্ত্রণ
যে ধরনের চাষই করা হোক না কেন তা আগাছামুক্ত রাখা হয়। কোনো কোনো ফসল চাষে আগাছা নিয়ন্ত্রণে তেমন মনোযোগ দিতে হয় না, তবে ফুলকপি চাষে আগাছা নিয়ন্ত্রণে বেশি মনোযোগ দিতে হয়। কারণ জমিতে কম-বেশি আগাছা থাকলে গাছে রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যার কারণে গাছ সঠিক পরিমাণে পুষ্টি পায় না এবং তাদের বৃদ্ধিও বন্ধ হয়ে যায়।
তবে যেহেতু মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করবো তাই আগাছা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে ১৫ থেকে ২০ দিন পর পর ড্রেনের আগাছা পরিস্কার করতে হবে এবং ফুলকপির গোড়ায় মাটি দিতে হবে।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের রোগ ও পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার ক্ষেত্রে সাধারণত রোগ ও পোকার আক্রমণ অনেক কম হয়। তবে ভালো ফলন পেতে হলে নিয়মিত সিডিউল স্প্রে দিতে হবে। ফুলকপিতে সাধারণত চারা রোপণের ৫ থেকে ৭ দিন পর পচন দেখা দিলে অথবা না পচন দেখা না দিলেও কারবন্ডাজিম গ্রোপের ছত্রাক নাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি হারে এবং এর সাথে ইমিটাক্লোরোপিড গ্রোপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে ভালো ভাবে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করতে হবে।
এছাড়াও ফুলকপিতে পাতা পোড়া রোগ এবং ফুলের মধ্যে পচন দেখা দিতে পারে। তবে প্রতি ৫ থেকে ৭ দিন পর পর নিয়মিত সিডিউল স্প্রে করলে ফুলকপি সুস্থ থাকবে আশা করা যায়। এছাড়াও ১৫ থেকে ২০ দিন পর পর গাছে পিজি আর স্প্রে করতে হবে।যাতে গাছের বৃদ্ধি ঠিক থাকে।
সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উওর
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ কেনো করবো?
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার কারণে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়। কারণ কৃষকদের সেচ কম দিতে হয়। দ্বিতীয়ত, এটি আগাছা অপসারণের খরচ বাঁচায়। তৃতীয়ত, এ কারণে কীটনাশক খরচ কম হয়। এসবের ফলন ভালো ফলন ও খরচ অনেক কম হয়, যার কারণে কৃষকের আয় দ্বিগুণ হয়।
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের সুবিদা কি কি?
মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করার অনেক গুলো সুবিদা রয়েছে । যেমনঃ
১.জমিতে
বেশি জল দেওয়ার দরকার নেই কারণ পলিথিন জলকে বাষ্প হতে দেয় না এবং দীর্ঘ
সময়ের জন্য আর্দ্রতা ধরে রাখে। অর্থাৎ সেচ খরচ কমায়।
২.শিকড়ের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
৩.বাহ্যিক রোগ থেকে উদ্ভিদের শিকড় রক্ষা করে। আর ফসল অন্যান্য ভাইরাস থেকে রক্ষা পায়।
৪.ভাল এবং পরিষ্কার ফসল ফলন
৫.ফসলের গুণমান বৃদ্ধি পায়
৬.লেবার খরচ অনেক কম লাগে
৭.কীটনাশক খরচ অনেক কম লাগে
৮.আগাছা নিয়ন্ত্রণে থাকে
৯. যেহেতু আগাছা কম হয়,তাই জমির সার আগাছা নষ্ট করতে পারেনা। ফলে সার অনেক কম লাগে।
১০. উৎপাদন খরচ কমায়ফুলকপি চাষের উপযুক্ত সময় কোনটি?
যেহেতু আমাদের দেশের কৃষকরা ফুলকপির বিভিন্ন জাতে উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময় যেমন অতি আগাম, মাঝারি আগাম,আগাম এবং সিজিনের সময় মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ করে থাকে। তাই ফুলকপির জাতের পরিপক্কতার সময় অনুসারে, আমরা বপনের সময়কে নিম্নরূপ শ্রেণীবদ্ধ করতে পারি-
১. খুব প্রাথমিক জাতের জন্য বপনের সময়: মে মাসের শেষ থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত,
২. আগাম জাতের জন্য বপনের সময়: পুরো জুন মাস পর্যন্ত,
৩. মাঝারি জাতের জন্য বপনের সময়: মধ্য জুলাই থেকে আগস্ট,
৪. দেরী জাতের জন্য বপনের সময়: সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর,মালচিং পদ্ধতিতে কি কি সবজি চাষ করা যায়?
স্ট্রবেরি, মরিচ, শসা, বাঁধাকপি, পেঁপে, করলা, কুমড়া, লেডিস ফিঙ্গার, টমেটো, ক্যাপসিকাম, তুলসী ইত্যাদি।
শেষকথা
প্রিয় পাঠক ভাই এবং বোনেরা আমি এই আর্টিকেলটিতে মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষ,ফুলকপি চাষের উপযুক্ত সময়,মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের সেচ ব্যবস্থাপনা,মালচিং পদ্ধতিতে ফুলকপি চাষের জমি নির্বাচন ইত্যাদি সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা বুজতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে অবশ্যই শেয়ার করবেন।