আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ। করলা চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক ভাই এবং বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আপনারা কি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই পোস্ট টিতে আমি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ,করলা চাষের উপযুক্ত সময, করলা চাষের আয় ব্যয় ইত্যাদি অর্থাৎ করলা চাষের সকল বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করবো।
করলাতে কি কি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে জানার আগে আসুন শুরুতেই জেনে নেই করলাতে কি কি পুষ্টিগুণ আছে। করলা মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারী ও ঔষধি গুণের ভাণ্ডার। এতে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়া যায়। করলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি এবং সি পাওয়া যায়। এছাড়াও ক্যারোটিন, বিটাক্যারোটিন, লুটেইন, আয়রন, জিঙ্ক, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো ফ্ল্যাভোনয়েড পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ
করলা বাত রোগ, গেঁটেবাত, গনোরিয়া এবং অ্যান্থেলমিন্টিক্সের নিরাময়। বড় করলা খেলে গনোরিয়া, জন্ডিস ও আফরার উপশম হয়। বড় করলার চেয়ে ছোট করলা বেশি উপকারী। করলা শীতল, ছিদ্রকারী, মৃদু, তেতো ও ক্ষয়কারী এবং জ্বর, পিত্ত, কাশি, রক্তের ব্যাধি, গনোরিয়া, প্রমেহ ও কৃমি রোগ নিরাময় করে। করলার বৈশিষ্ট্যও করলার মতোই। করলার শাক একটি চমৎকার খাদ্য। এটি বাত, গাউট, লিভার, পেট ফাঁপা, বৃদ্ধি এবং দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগে উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। এতে আয়রন, ফসফরাস এবং অল্প পরিমাণে ভিটামিন সিও পাওয়া যায়।
করলার ব্যবহার ও উপকারিতা
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে জানার আগে করলার ব্যবহার ও উপকারিতা আমাদের জানা দরকার। করলা একটি সবজি হিসাবে চাষ করা হয়, এর গাছগুলি লতার মতো, যার কারণে এটিকে লতা ফসলের শ্রেণিতে রাখা হয়েছে। করলা সবজি খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া ছাড়াও করলার রস ও করলার আচার ব্যবহার করা হয়।
করলার রস খেলে পেট সংক্রান্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং করলা ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়। এটি একটি ঔষধি গাছ এবং এর ফল খেলে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা, পেটব্যথা, জ্বর, জরায়ুর রোগ, কুষ্ঠরোগ ইত্যাদির মতো অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। করলা দুর্বলতা দূর করে। শুধু তাই নয়, করলার বীজ ক্ষত, খাদ্যনালী, প্লীহা রোগ এবং লিভার সংক্রান্ত রোগে ব্যবহৃত হয়।
কৃষকরা কেন আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করবে ?
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করে কৃষকরা খুব কম খরচে ভালো লাভ করতে পারে। অনেক কৃষক বলছেন, এর চাষে খরচের তুলনায় ২ গুণ বেশি লাভ পান। কারণ বাজারে এর চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাওয়া যায়। অনেক কৃষক আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করে ভালো লাভ পাচ্ছেন। করলা চাষকারীরা জানান ১ বিঘা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করে খরচ হয় প্রায় ৩০ থেকা ৩৫ হাজার টাকা এবং ভালো ফলন হলে ১২০০০০ থেকে ১৫০০০০ টাকা বিক্রি হয়।
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ
আমাদের দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই প্রায় সারা বছর করলা চাষ করা হয়ে থাকে। আমরা সকলেই জানি আমাদের দেশে বর্তমানে সারা বছরই করলার বাজার দর ভালো থাকে। তাই আমাদের দেশের কৃষকরা দিন দিন করলা চাষের দিকে ঝুকতেছে। কিন্তু আমাদের দেশের বেশির ভাগ কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে জানেনা। তাই এই আর্টিকেলটিতে আমি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতেছি। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন। আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চাষ করতে হবে। যেমনঃ
১.উপযুক্ত সময়ে করলা চাষ করতে হবে।
২. করলা চাষের জন্য সঠিক আবহাওয়া কোনটি তা জানতে হবে
৩.করলা চাষের জন্য উপযুক্ত জমি নির্বাচন
আরো পড়ুনঃ মালচিং পদ্ধতিতে শীতকালীন শসা চাষ
৪.করলা চাষের জন্য বীজের পরিমাণ এবং বীজ শোধন
৫.সঠিক পদ্ধতিতে করলার চারা তৈরি
৬.চারা বা বীজ রোপণের পদ্ধতি
৭.করলা ক্ষেতে সার ব্যবস্থাপনা
৮.করলা চাষে সেচ ব্যবস্থাপনা
৯. আগাছা নিয়ন্ত্রন
১১.করলা গাছের জন্য মাচা তৈরি
১২.রোগ ও পোকামাকড় দমন
১৩. করলা সংগ্রহ করা
করলা চাষের উপযুক্ত সময়
আসলে করলা বারো মাস চাষ করা যায়। কারণ বিজ্ঞানীরা করলার এমন হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করেছেন যার মাধ্যমে আপনি সারা বছরই করলার চাষ করতে পারবেন। আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষকে তিনটি উপায়ে ভাগ করতে পারি যা নিম্নরূপ। গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য এটি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বপন করা যায়। সমভূমিতে, এটি জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে বর্ষাকালে বপন করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে এটি মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বপন করা হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে করলা গ্রীষ্ম ও বর্ষা উভয় মৌসুমেই চাষ করা যায়।
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা গ্রীষ্ম ও বর্ষা উভয় মৌসুমেই চাষ করা যায়। এর গাছপালা সহজেই ঠান্ডা জলবায়ু সহ্য করতে পারে, তবে শীতকালে তুষারপাত গাছের ক্ষতি করে। করলা গাছগুলি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ভাল বৃদ্ধি পায়, তবে বীজগুলি অঙ্কুরিত হওয়ার জন্য 20 ডিগ্রি তাপমাত্রা প্রয়োজন। এর গাছগুলির ভাল বৃদ্ধির জন্য উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন। 25 থেকে 35 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ফসলের ভাল বৃদ্ধি, ফুল ও ফলের জন্য ভাল। 22 থেকে 25 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বীজ অঙ্কুরোদগমের জন্য ভাল।
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য উপযুক্ত জমি
আপনাদের বলে রাখি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য বিশেষ কোনো মাটির প্রয়োজন হয় না। যে কোনো উর্বর মাটিতে এটি সহজে জন্মানো যায়, তবে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য উপযুক্ত নিষ্কাশনযুক্ত বেলে-দোআঁশ মাটিকে চাষের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়েছে। এ ছাড়া চাষের জন্য জমির pH মান 6 থেকে 8 হতে হবে। করলা চাষ করলে এ ধরনের জমিতে উচ্চ মানের সঙ্গে ভালো ফলন পাওয়া যায়। যার কারণে কৃষক ভাইরা এর চাষ থেকে যথাযথ লাভ পান।
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য বীজের পরিমাণ এবং বীজ শোধন
দেশি ও হাইব্রিড উভয় জাতের করলার বীজই বাজারে সহজলভ্য। বিভিন্ন জাতের ফলন ও পাকার সময় ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। করলা চাষের জন্য, আপনার প্রতি একরে 500 থেকে 600 গ্রাম বীজের প্রয়োজন হবে। জমিতে রোপণের আগে এই বীজগুলি শোধন করে নিতে হয়। তবে হাইব্রিড করলার বীজ সরাসরি বপনে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি যদি হাইব্রিড বীজ ব্যতীত অন্য জাতের বীজ রোপণ করতে চান, তাহলে বীজ বপনের আগে 2 গ্রাম কার্বোনাডিজিম/কেজি বীজ দিয়ে শোধন করুন।
সঠিক পদ্ধতিতে করলার চারা তৈরি
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতিতে করলার চারা তৈরি খুব গুরুত্ব পূর্ণ। করলার চারা নার্সারিতে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে তৈরি করা যায়। অথবা বর্তমানে আমাদের দেশে বেশ কিছু জেলায় গ্রীন হাউজের ভিতরে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে সিডলিং ট্রের মধ্যে ১০০ ভাগ সুস্থ চারা উৎপাদন করা হচ্ছে । এই চারা গুলো আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয়।
চারা বা বীজ রোপণের পদ্ধতি
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে করলা দুইভাবে রোপণ করা যায়। একটি হল বীজের মাধ্যমে সরাসরি জমিতে বপন করা এবং অন্যটি হল চারা তৈরি করে রোপণ করা। নীচে আমরা আপনাকে করলা বপনের ধাপে ধাপে পদ্ধতিটি বলছি, যা নিম্নরূপ-
করলা ফসল বপনের আগে ক্ষেত ভালো করে লাঙল দিতে হবে। এরপর সমতল করে মাঠটি সমতল করতে হবে। এখন প্রায় দুই ফুট দূরে বিছানা তৈরি করুন। এই বেডের ঢালের উভয় পাশে প্রায় 1 থেকে 1.5 মিটার দূরত্বে বীজ রোপণ করুন। বীজগুলি জমিতে প্রায় 2 থেকে 2.5 সেন্টিমিটার গভীরতায় থাকতে হবে। বীজ বপনের আগে এক দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
এরপর ছায়ায় শুকিয়ে বীজ বপন করতে হবে।
ক্ষেতে, পুরুষ পিতামাতার 1/5 অংশ এবং মহিলা পিতামাতার 4/5 অংশ বিভিন্ন বিভাগে বপন করতে হবে।
জমিতে করলার চারা রোপণের সময় ড্রেন থেকে ড্রেনের দূরত্ব 2 মিটার, গাছ থেকে চারা পর্যন্ত দূরত্ব 50 সেমি এবং ড্রেনের শিলাগুলির উচ্চতা 50 সেমি রাখতে হবে।
করলা ক্ষেতে সার ব্যবস্থাপনা
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে আগে ক্ষেত প্রস্তুত করার সময়, 15 থেকে 20 টন গোবর সার বা কম্পোস্ট সারও ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া এক একর জমিতে ৫০ কেজি ডিএপি, ৫০ কেজি সিঙ্গেল সুপার ফসফেট, ৫০ কেজি ইউরিয়া, ৫০ কেজি পটাশ, ১০ কেজি ফুরাডান ব্যবহার করা হয়। এরপর প্রতি ২৫ থেকে ৩০ দিন পর পর করলা গাছের অবস্থা বুজে পরিমান মত সার প্রয়োগ করুন।
করলা চাষে সেচ ব্যবস্থাপনা
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করার ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে নিয়মিত সেচ দেওয়া খুব গুরুত্ব পূর্ণ। যদি জমিতে চারা রোপণ করা হয়, তাহলে রোপণের পরপরই সেচ দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে প্রতি ৬ থেকে ৭ দিন পর পর এবং বর্ষাকালে প্রয়োজনমতো সেচ দিতে হবে। করলা ফসলের জন্য মোট ৮ থেকে ৯টি সেচের প্রয়োজন হয়।
আগাছা নিয়ন্ত্রন
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করার ক্ষেত্রে করলার জমির আগাছা নিয়ন্ত্রন করা খুব জরুরি। বিভিন্ন উপায়ে করলার জমির আগাছা নিয়ন্ত্রন করা যায়। যেমন- নিয়মিত জমি নিড়ানি দিয়ে,জমিতে আগাছা নাশক স্প্রে করে অথবা আরেকটি বর্তমানে খুব জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে মালচিং পেপার ব্যবহার করে আগাছা নিয়ন্ত্রন করা।
আরো পড়ুনঃ মালচিং করার প্রয়োজনীয়তা কি
মালচিং পেপার ব্যবহার করলে শুধু যে আগাছা নিয়ন্ত্রন হয় তাই নয়,মালচিং পেপার ব্যবহারের ফলে মাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রনে থাকে, রোগ ও পোকাপাকড়ের আক্রমণ কম হয় এবং ফলন অনেক ভালো হয়। অর্থাৎ মাটির আর্দ্রতা রক্ষা করতে, আগাছা দমন করতে এবং মাটির সমান তাপমাত্রা বজায় রাখতে মালচ (জৈব বা প্লাস্টিক) প্রয়োগ করুন।
করলা গাছের জন্য মাচা তৈরি
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করার ক্ষেত্রে আরেকটি খুব গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় হচ্ছে মাচা তৈরি। আমরা সকলেই জানি করলা লতা জাতীয় সবজি ফসল। আর লতা জাতীয় সবজি ফসলের ক্ষেত্রে মাচা দেয়া জরুরি। করলা মাচা বিভিন্ন ভাবে দেয়া যায় যেমন- ফ্ল্যাট মাচা,A প্যাটানের মাচা, উল্টা U সেপের মাচা। তবে বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করার ক্ষেত্রে A প্যাটানের মাচা খুব জনপ্রিয়।
রোগ ও পোকামাকড় দমন
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ। করলার চারা অবস্থায় করলা গাছে পচন দেখা দেয়। এই ড়গ নিয়ন্ত্রনের জন্য কারবন্ডাজিম গ্রোপের কীটনাশক প্রতিলিটার পানিতে ২ মিলি হারে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে ৭ দিন পর পর ৩ বার।
এছাড়াও করলা গাছে বিভিন্ন চোশক পোকা যেমন-সাদা মাছি,লাল মাকড়,জেসিড ইত্যাদি আক্রমণ করে থাকে। এই চোশক পোকা নিয়ন্ত্রনের জন্য ইমিটাক্লোরোপিড গ্রোপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে ভালো ভাবে মিশিয়ে শেষ বিকেলে ৭ দিন পর পর নিয়মিত স্প্রে করতে হবে।
করলা সংগ্রহ করা
করলা সাধারণত জাতের উপর নির্ভর করে রোপণের 60-70 দিন পরে ফসল কাটার জন্য প্রস্তুত হয়। ফল সংগ্রহ করুন যখন তারা এখনও সবুজ, দৃঢ় এবং সর্বোত্তম স্বাদ এবং গুণমানের জন্য প্রায় 4-6 ইঞ্চি লম্বা থাকে। সকাল বেলা করলা সংগ্রহ করা ভালো। কারন সকাল বেলা ফল তরতাজা থাকে।
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে সাধারণ কিছু প্রশ্ন ও উওর
করলা গাছে কি কি সার দিতে হয়?
আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের ক্ষেত্রে আগে ক্ষেত প্রস্তুত করার সময়, 15 থেকে 20 টন গোবর সার বা কম্পোস্ট সারও ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া এক একর জমিতে ৫০ কেজি ডিএপি, ৫০ কেজি সিঙ্গেল সুপার ফসফেট, ৫০ কেজি ইউরিয়া, ৫০ কেজি পটাশ, ১০ কেজি ফুরাডান ব্যবহার করা হয়। এরপর প্রতি ২৫ থেকে ৩০ দিন পর পর করলা গাছের অবস্থা বুজে পরিমান মত সার প্রয়োগ করুন।
করলা চাষের উপযুক্ত সময় কোনটি?
আসলে করলা বারো মাস চাষ করা যায়। কারণ বিজ্ঞানীরা করলার এমন হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করেছেন যার মাধ্যমে আপনি সারা বছরই করলার চাষ করতে পারবেন। আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষকে তিনটি উপায়ে ভাগ করতে পারি যা নিম্নরূপ। গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য এটি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বপন করা যায়। সমভূমিতে, এটি জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে বর্ষাকালে বপন করা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে এটি মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বপন করা হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে করলা গ্রীষ্ম ও বর্ষা উভয় মৌসুমেই চাষ করা যায়।
কোন মাটিতে করলা চাষ ভালো হয়?
আপনাদের বলে রাখি আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য বিশেষ কোনো মাটির প্রয়োজন হয় না। যে কোনো উর্বর মাটিতে এটি সহজে জন্মানো যায়, তবে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষের জন্য উপযুক্ত নিষ্কাশনযুক্ত বেলে-দোআঁশ মাটিকে চাষের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়েছে। এ ছাড়া চাষের জন্য জমির pH মান 6 থেকে 8 হতে হবে। করলা চাষ করলে এ ধরনের জমিতে উচ্চ মানের সঙ্গে ভালো ফলন পাওয়া যায়। যার কারণে কৃষক ভাইরা এর চাষ থেকে যথাযথ লাভ পান।
শেষকথা-আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ
প্রিয় পাঠক ভাই এবং বোনেরা আমি এই পোস্ট টিতে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই আলোচনা থেকে আমরা খুব সহজেই বুজতে পারি করলা স্বাদে তেত হলেও এর মধ্যে প্রচুর পুষ্টিগুন রয়েছে এবং এটি খুব লাভজনক একটি সবজি ফসল।
সুতরাং আপনারা চাইলে আধুনিক পদ্ধতিতে করলা চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।